সামনেই রাস পূর্ণিমা। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিন রাধা ও অন্যান্য গোপিদের সাথে রাসলীলা মেতে উঠেন শ্রীকৃষ্ণ। অর্থাৎ এই দিনটি গোপিনীদের সহযোগে রাধাকৃষ্ণের মহামিলনের উৎসব। রাধা কৃষ্ণের এই রাসযাত্রা আসলে কেমন? যুগ যুগ ধরে কোথায় পালিত হয় এই উৎসব জেনে নিন এই প্রতিবেদনে ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব হল রাধা কৃষ্ণের রাসযাত্রা। মনে করা হয় ‘রস’ থেকেই ‘রাস’ কথাটি এসেছে। প্রেমের রসে মাখা এই উৎসবের নাম রাসযাত্রা।এই উৎসবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে রাধার মহামিলনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে পরম ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার মহামিলন। এই বিশেষ উৎসবেই গোপিনীদের সহযোগে রাধা কৃষ্ণের প্রার্থনা করা হয়।
রাসলীলা / রাস নৃত্য
শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাবে বৃন্দাবন জুড়ে দিব্যলীলা বিলাস করছিলেন। ৮ বছর বয়সে শ্রীকৃষ্ণ শরৎ পূর্ণিমার মধ্যরাতে বৃন্দাবনের কুঞ্জে তার বংশীধ্বনি দ্বারা প্রিয় ভক্ত গোপীদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই বংশীধ্বনি শুনে ব্রজগোপীরা গৃহ থেকে বেরিয়ে কৃষ্ণের কাছে ছুটে যায়। এবং শ্রীকৃষ্ণ আগত সকল গোপীদের সাথে নৃত্যে মেতে উঠেন। এই নৃত্যকে রাসনৃত্য বা রাসলীলা বলা হয়।
লোকোকথা অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের সংস্পর্শে এসে গোপিনীদের অহংকার জন্মায়। শ্রীকৃষ্ণ অন্তর্হিত হলে গোপিনীরা তাদের ভুল বুঝতে পারে। এবং স্তব স্তুতি করেন। ফলস্বরূপ শ্রীকৃষ্ণ ফিরে এসে তাদের অন্তরাত্মা শুদ্ধ করেন এবং সকল মনষ্কামনা পূরণ করে গোপিনীদের জাগতিক ক্লেশ থেকে মুক্ত করেন। এই ভাবেই রাস উৎসব শুরু হয়। এবং যুগ যুগ ধরে প্রতিবছর বিশেষ পূর্ণিমা তিথিতে রাস উৎসব পালিত হয়। ২০২৪ এ রাস পূর্ণিমা পড়েছে আগামী ১৫ নভেম্বর, ওই একই দিনে রয়েছে গুরু নানকের জন্মতিথি।
যেখানে যেখানে রাস উৎসব বিশেষভাবে প্রচলিত।
প্রথম শ্রী চৈতন্যদেব নবদ্বীপে এই উৎসব চালু করেন। এছাড়াও বৃন্দাবন, মথুরা, অসম, ওড়িশা, মনিপুর, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, কোচবিহার প্রভৃতি অঞ্চলে জাঁকজমক ভাবে রাস পূর্ণিমা উৎসব পালিত হয়।