ভাষার বিবর্তন
আজ থেকে ৫০০০ খ্রিস্টপূর্ব আগে ছিল ইন্দো ইউরোপীয় ভাষা বংশ। এটি পৃথিবীর আদি ভাষা বংশ গুলির মধ্যে একটি। এই ভাষা বিবর্তনের মাধ্যমেই শুরু হয়েছে আজকের বাংলা ভাষা। এই ভাষার প্রাচীন ঐতিহ্য আছে, এই ভাষাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা –
১. কেন্তম
২. শতম
এই দুটি কোন ভাষা নয় এটি হলো ইন্দো ইউরোপীয় ভাষার দুটি শাখা ইউরোপ অঞ্চলের মানুষ কিংডম এবং ভারতীয় অঞ্চলের মানুষ শতম ভাষায় কথা বলতো। শতম গোষ্ঠীর দক্ষিণ দিকে এশিয়া মাইনরের দিকে এসে বিভিন্ন ভাষার জন্ম দেয়। বাংলাদেশের বসবাসকারী মানুষ কথা বলে ভারতীয় ভাষায়। আনুমানিক ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বে আর্যরা ভারতে এলে ভারতীয় ভাষা ও আর্য ভাষার সংমিশ্রণে তৈরি হয় ভারতীয় আর্য ভাষা। তখন থেকে ভারতীয়রা এই ভাষায় কথা বলতে শুরু করে।
এই ভারতীয় আর্য ভাষা তিনটি ভাগে বিভক্ত হয় যথা-
১. প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা
এই ভাষার সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ এই সময়ের মূল ভাষা বেদ। পানিনির অষ্টাধ্যই ব্যাকরণ বৈদিক ভাষা সংস্কার করে তৈরি করেছিলেন সংস্কৃত।
২. মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা
এই ভাষার সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ। এই সময় সংস্কৃত ভাষার আমুল পরিবর্তন ঘটে ও তৈরি হয় নতুন ভাষা প্রাকৃত। ভারতের বিভিন্ন স্থানে পাঁচ রকমের প্রাকৃত প্রচলিত ছিল-মহারাষ্ট্রি প্রাকৃত, শৌরসেণী প্রাকৃত , পৈশাচি প্রাকৃত, মাগধী প্রাকৃত অর্ধ মাগধী প্রাকৃত। এর পরবর্তী পর্যায়ে হলো অপভ্রংশ। এক একটি প্রাকৃত থেকে অপভ্রংশের জন্ম হয়।
৩.নব্য ভারতীয় আর্য ভাষা
এই ভাষার সময়কাল ৯০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমান কাল। এই সময় অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার সৃষ্টি হয়। অপভ্রংশের একটি রূপ হল বঙ্গ কামরূপী সেখান থেকে সরাসরি সৃষ্টি হয় বাংলা, অসমীয়া, উড়িয়া।
বাংলা ভাষার সৃষ্টি-
ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে দশম শতকে বাংলা ভাষার সৃষ্টি। এবং ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লা এর মতে সতন শতকে গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষা সৃষ্টি হয়।