কলকাতার একটি বিখ্যাত প্রাচীনতম ঐতিহ্য কালীঘাটের মন্দির। বহু স্থান থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে মূর্তি দর্শন করতে আসেন। এই মন্দির অন্যতম দর্শনীয় কালী মন্দির এটির উৎপত্তি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।
এই কালীঘাট মন্দিরের অবস্থানের সঙ্গে সতীর পায়ের আঙ্গুলের সম্পর্ক রয়েছে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে বিশ্বাস করা হয় সতী তার বাপের বাড়ির পুজোর আয়োজনে তার স্বামীকে স্বাগত না জানানোর জন্য পিতার সাথে লড়াই করে নিজের জীবন্ত দেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। শিব রাগান্বিত অবস্থায় এসে তান্ডব নৃত্য করে এবং সতীকে নিজের কাঁধে তুলে বিষ্ণুর কাছে যায়। তিনি তার চক্রের দ্বারা সতীর দেহ কয়েকটি টুকরো করে এবং ওই টুকরোর একটি অংশ অর্থাৎ সতীর ডান পায়ের আঙ্গুল যে স্থানে পড়েছিল সেই স্থানে গড়ে তোলা হয় কালীঘাট মন্দির।
অনেকে বলেন কালীঘাট মন্দির উৎপত্তির পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আছে রায়চৌধুরী পরিবার। আনুমানিক ১৫৭০ সালের সাবর্ণ রায় চৌধুরীর পরিবারের পদ্মাবতী স্বয়ং মা কালী কে স্বপ্নে দেখেন। পরের দিন সকালে কালীঘাটের সতীর পায়ের আঙ্গুল আবিষ্কার করেন সেই থেকে কালীঘাট মন্দির নির্মাণ করে পুজো শুরু হয়। এবং কালীঘাট হয়ে ওঠে ৫১ সতী পিঠের অন্যতম।
এই মন্দিরের সবথেকে আকর্ষণীয় বিষয়টি হল মূর্তি রূপ। মূর্তিটি কষ্টিপাথরের নির্মিত মাথায় রয়েছে সোনার মুকুট। অন্যান্য মূর্তি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল সোনার তৈরি লম্বা জিভ। এছাড়াও মূর্তির চারটি হাত ছিল রুপোর বর্তমান তা সোনার। মূর্তির এই বিখ্যাত রূপের পাশাপাশি বিখ্যাত ছিল মন্দিরের স্নানাগার। মন্দিরের পুরোহিতরা চোখ বন্ধ রেখে প্রতিমাকে স্নান করান। মন্দিরটি বিশেষ করে সৌন্দর্য অনন্য স্থাপত্য হিসেবে বেশি পরিচিত।